• রাত ৯:৩১ মিনিট রবিবার
  • ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ঋতু : গ্রীষ্মকাল
  • ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
এই মাত্র পাওয়া খবর :
সোনারগাঁয়ে তিনদিন ব্যাপী ফায়ার সার্ভিসেরর স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষন সোনারগাঁয়ে আস্থা ফিডে সেনা প্রধান সোনারগাঁয়ে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্দ সোনারগাঁও পৌরসভায় কালামের কেন্দ্র কমিটির সভা সোনারগাঁয়ে বিশ বছর পর বাকপ্রতিবন্ধী ভাইকে ফিরে পেলেন তার বড় ভাই মাহফুজুর রহমান কালামকে বিজয়ী করেতে জামপুরে আলোচনা সভা সোনারগাঁয়ে প্রার্থীতা ফিরে পেলেন ৫ প্রার্থী সোনারগাঁয়ে ভবন ঘেঁষে মাটি খনন, ভেঙ্গে পড়লো পাশের স্থাপনা কালাম একমাত্র যোগ্য প্রার্থী, উপজেলা নির্বাচনে তাকে ভোট দিন: ডা. বিরু সোনারগাঁয়ে সার্বজনীন পেনশন মেলা ও স্পট রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম উদ্ধোধন বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বউয়ের মামলা সোনারগাঁয়ে ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৯ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ, ৪ জন বাতিল সোনারগাঁয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যুবককে অপহরন করে নির্যাতনের অভিযোগ সানাউল্লাহকে ডাকাত আখ্যা দিয়ে হত্যা চেষ্টা ও ১৫ মামলার আসামী গ্রেপ্তার বন্দরে ইউএনও অফিসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যের আত্মহত্যা সোনারগাঁয়ে ২দিন ধরে মাদ্রাসা ছাত্র নিখোঁজ সোনারগাঁয়ে দুই ব্যাক্তি আটক, ৪৯ লাখ জাল টাকা উদ্ধার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন আজিজুল ইসলাম মুকুল সোনারগাঁয়ে ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১৪ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল তাপদাহের প্রভাব পড়েছে সোনারগাঁয়ের বাজার ও মার্কেটগুলোতে
“সোনারগাঁয়ের হৃদয়ে জয়নুল আবেদিন” শীর্ষক আলোচনা সভা

“সোনারগাঁয়ের হৃদয়ে জয়নুল আবেদিন” শীর্ষক আলোচনা সভা

Logo


নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারু শিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির আয়োজনে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের শুভ জন্মদিন উপলক্ষে “সোনারগাঁয়ের হৃদয়ে জয়নুল আবেদিন” শীর্ষক আলোচনা সভা পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির মহাসচিব মীযানুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ পল্টি এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ জহিরুল ইসলাম খোকন, প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁও কৃষক লীগের আহবায়ক করিম আহমেদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটি সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, হারুন অর রশিদ, বোরহান বকুল।

অনুষ্টানটি সঞ্চালনা করেন পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন।

এ দেশের মাটি ও মানুষের শিল্পী শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন। তিনি ১৯১৪ সালের ২৯শে ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ জেলার কেন্দুয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট, ময়মনসিংহ সংগ্রহশালার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক সোনারগাঁয়ে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন।

কোনো দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো সে দেশের লোক ও কারুশিল্প। প্রায় অর্ধ শতাব্দী আগে শিল্পাচার্য লোক ও কারুশিল্পের সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রদর্শন এবং এ বিষয়ে গবেষণা ও প্রকাশনার জন্য একটি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করেন। স্বাধীনতার আগে তিনি ঢাকা জাদুঘরে একটা ফোক আর্ট গ্যালারি স্থাপনের কথা তিনি চিন্তা করছিলেন।

পাকিস্তান আমলে সে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। অবশেষে স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় তাঁর বহু দিনের সে স্বপ্ন সফল হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর তদানীন্তন সচিব ড. সাত্তার এ প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। এভাবে ১৯৭৪ সালের ১২ মার্চ গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ ফাউন্ডেশন গঠিত হয়।

লোক ও কারুশিল্প সংগ্রহ এবং কারুপল্লি স্থাপন এ ফাউন্ডেশনের মুখ্য উদ্দেশ্য হিসেবে এ-সংক্রান্ত রেজুলেশনে উল্লেখ করা হয়। ঢাকা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ইতিহাস বিজড়িত নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এ ফাউন্ডেশন স্থাপিত হয়, যা জনসাধারণের কাছে ‘সোনারগাঁ জাদুঘর’ নামে পরিচিত।

১৯৭৬ সালের অক্টোবর মাসে সরদারবাড়ি নামক পুরোনো জমিদারবাড়ি মেরামত করে

তাতে লোকশিল্প জাদুঘর স্থাপিত হয়। এখন প্রতি বছর ১৫ই জানুয়ারি সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প জাদুঘরে কারু পল্লী মেলার আয়োজন করা হয়। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন খুব ছোটবেলা থেকেই তিনি ছবি আঁকতে পছন্দ করতেন। পাখির বাসা, পাখি, মাছ, গরু-

ছাগল, ফুল-ফল এঁকে মা-বাবাকে দেখাতেন। ছেলেবেলা থেকেই শিল্পকলার প্রতি তার গভীর আগ্রহ ছিল। মাত্র ষোল বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে তিনি বন্ধুদের সাথে কলকাতায় গিয়েছিলেন শুধু গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টস দেখার জন্য।

কলকাতা গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টস ঘুরে আসার পর সাধারণ পড়াশোনায় জয়নুল আবেদিনের মন বসছিল না। তাই ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে ম্যাট্রিক পরীক্ষার আগেই স্কুলের

পড়ালেখা বাদ দিয়ে কলকাতায় চলে যান এবং মায়ের অনুসমর্থনে গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টস-এ ভর্তি হন। তাঁর মা জয়নুল আবেদিনের আগ্রহ দেখে নিজের গলার হার বিক্রি করে ছেলেকে কলকাতার তখনকার আর্ট স্কুলে ভর্তি হতে সাহায্য করেন।

জয়নুল আবেদিন ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কলকাতার সরকারি আর্ট স্কুলে পড়েন। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টসের ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৫৮ সালে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক প্রাইড অফ পারফরম্যান্স পুরস্কার প্রদান করেন। চিত্রাঙ্কন এ উল্লেখযোগ্য অবদান এর জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করেন।

জয়নুল আবেদিন ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষ চিত্রমালার জন্য বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছেন। এ ছাড়াও তার বিখ্যাত শিল্পকর্মগুলো হল: ১৯৫৭-এ নৌকা, ১৯৫৯-এ সংগ্রাম, ১৯৭১-এ বীর মুক্তিযোদ্ধা, ম্যাডোনা প্রভৃতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তার দীর্ঘ দুটি স্ক্রল ১৯৬৯-এ অঙ্কিত ‘নবান্ন’ এবং ১৯৭৪-এ অঙ্কিত ‘মনপুরা-৭০’ জননন্দিত দুটি শিল্পকর্ম। তিনি চিত্রাঙ্কনের চেয়ে চিত্রশিক্ষা প্রসারের

ওপর অনেক বেশি সময় ব্যয় করেছেন। অনুমান করা হয় তার চিত্রকর্মের সংখ্যা তিন হাজারের বেশি ছিল।

জয়নুল আবেদিন ১৯৭৬ সালের ২৮ মে মৃত্যুবরণ করেন। চারুকলা ইনস্টিটিউটে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। তার আঁকা শেষ ছবি- “দুই মুখ”। সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারু শিল্প ফাউন্ডেশন উপ পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সোনারগাঁবাসীর জন্য গর্বের তার স্মৃতি ধরে রাখা ও আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।

আমারা সোনারগাঁ বাসি তথা দেশবাসী সকলে তাঁর রুহে আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করি, আল্লাহ যেন উনাকে বেহেশতের উচ্চতম স্থান দান করেন।


Logo

Website Design & Developed By MD Fahim Haque - Web Solution